ঝুঁকি ব্যবস্থা ও আর্থিক সুরক্ষার মাধ্যম বিমা।
বীমা কি
বীমা হচ্ছে একটি ব্যবস্থাপনা যা দ্বারা আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়।বীমা মূলত করা হয় মানুষের ক্ষতিপূরণ করার লক্ষ্যে।যেমন কোনো ইন্সুরেন্স কোম্পানিতে যদি প্রিমিয়াম হিসেবে আপনি টাকা জমা রাখেন তাহলে ব্যক্তির ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হলে সেই টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে কোম্পানি দিয়ে থাকে।
বীমা বিভিন্ন ধরনের হতে পারে।যেমন - জীবন বীমা,স্বাস্থ্য বীমা,দূর্ঘটনা বীমা, সম্পত্তি বীমা,গাড়ি বীমা ইত্যাদি।আর যেসব প্রতিষ্ঠান এসব সেবা প্রদান করে থাকে তাদেরকে বলা হয় বীমা বা ইন্সুরেন্স কোম্পানি। বীমার ইতিহাস
বীমার ইতিহাস খুবই দীর্ঘ। কিছু সভ্যতার সাথে সাথে বীমার উন্নতি লাভ করে আসছে।বীমার ইতিহাসে প্রচলিত কিছু প্রথা প্রাচীনকালে ছিল।
প্রাচীন যুগে ভারতে বীমার মতো ব্যবস্থা ছিল,যা ছিল সমাজের মানুষের মধ্যে পারস্পরিক আর্থিক সহায়তা ও ঝুঁকি ভাগ করে নিতো।ব্যবিলনেও ব্যবসায়ীদের ঝুঁকি কমানোর জন্য ব্যবসায়ীক বীমা করে রাখা হতো।
ব্যবিলনে ব্যবসায়ের ক্ষতিপূরণ হিসেবে কিছু চুক্তি করে রাখতো।ইতালির জেনোয়া শহরে এক ধরনের বীমা প্রচলিত ছিল যা "মেরিন বীমা" নামে পরিচিত ছিল।
১৬৮৮ সালে ইংল্যান্ডের একটি কফি হাউজে বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা একত্রিত হয়ে মেরিন বীমার জন্য পরবর্তীতে এটির নাম দেয়া লন্ডন লয়েডস বীমা।
জীবন বীমার প্রথম প্রবর্তিত হয় ১৭ শ শতাব্দীতে।তবে ১৭৫০ সালের দিকে লন্ডনে প্রথম জীবন বীমা বীমা কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হয়।
আমেরিকায় সর্বপ্রথম বীমা কোম্পানি চালু হয় ১৮ শ শতাব্দীতে। এছাড়াও বীমা পলিসিও চালু হয় একই সময়ে।বাংলাদেশে বীমা চালু হয় পাকিস্তান আমল থেকেই, ১৯৭৩ সালের দিকে জীবন বীমা ও সাধারণ বীমা কর্পোরেশন চালু হয়েছিল।
এখন বর্তমানে বীমার অনেক উন্নতি ও ব্যপক বিস্তার লাভ করেছে।তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে বীমারও পলিসি আপডেট হয়েছে।
বীমার জনক কে
বীমার জনক হিসেবে জর্জ ফ্রেডেরিককে ধরা হয়।জর্জ ফ্রেডেরিক ১৭ শতাব্দীতে প্রথম বীমার সম্পর্কে ধারণা দেন।তবে আধুনিক বীমার ভিত্তি হিসেবে জন গ্রান্টকে উল্লেখ করা হয়।জন গ্রান্ট জনসংখ্যা ও মৃত্যুর উপর নির্ভর করে "Bill of Mortality" তৈরী করেছিলেন।
তবে বীমার জনক হিসেবে জর্জ ফ্রেডেরিককে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়।কারণ তিনিই সর্বপ্রথম বীমার ধারনাটি সবার মাঝে উপস্থাপন করেছিলেন।
সরকারি বীমা কয়টি ও কী কী
জীবন বীমা কর্পোরেশন :
জীবন বীমা কর্পোরেশন এটি হচ্ছে বাংলাদেশের সরকারি একটি প্রতিষ্ঠান। এটি প্রধানত জীবন বীমার ক্ষেত্রে প্রধান সরকারি প্রতিষ্ঠান।
১৯৭০ সালে বাংলাদেশের এই বীমা কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।এই প্রতিষ্ঠানটি জীবন বীমা পলিসি,অক্ষমতা, মৃত্যু ও অবসর জীবনে আর্থিক নিরাপত্তা দিয়ে থাকে।
সাধারণ বীমা কর্পোরেশন :
১৯৭৩ সালে এই বীমা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।শুধুমাত্র জীবন বীমা ছাড়া অন্যান্য সকল বীমা প্রদান করে থাকে।যেমন গাড়ি বীমা,দূর্ঘটনার বীমা,ইত্যাদি।
সুতরাং এগুলোই হচ্ছে বাংলাদেশের সরকারি বিমা প্রতিষ্ঠান। এদের সুনাম অনেক,বিশেষ এসব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের জন্য সুনাম বা খ্যাতি অর্জন করেছে।
বাংলাদেশের সেরা বীমা কোম্পানি
বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি সেরা বীমা কোম্পানি রয়েছে।যারা কিছু কিছু সেবার বিনিময়ে সুনাম অর্জন করেছে।আমি নিচে কয়েকটি বীমা কোম্পানি তালিকা দিয়েছি যা তাদের সেবার মান,আপডেট পলিসি প্রণয়ন, গ্রাহকের সন্তুষ্ট সেবা ইত্যাদি :
জীবন বীমা কর্পোরেশন :
জীবন বীমা কর্পোরেশন হচ্ছে বাংলাদেশের জীবন বীমা খাতের সরকারি প্রতিষ্ঠান।
সাধারণ বীমা কর্পোরেশন :
জীবন বীমা বাদে কিছু বীমা দিয়ে থাকে। তবে এটি একটি বাংলাদেশের সরকারি প্রতিষ্ঠান।
ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লি :
জীবন এবং স্বাস্থ্য খাতে অন্যতম একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।
গ্রীন ডেল্টা ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লি :
সাধার বীমার খাতে ব্যবহার করা হয়।এটিও একটি বাংলাদেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।
মেটলাইফ বীমা কোম্পানি
মেটলাইফ হচ্ছে একটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বীমা কোম্পানি। জীবন বীমা বাংলাদেশের মধ্যে সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
উপসংহার
বীমা কী এবং বিস্তারিত জানলেন।বীমা হচ্ছে একটি জীবনের ঝুঁকি কমানোর আস্থা।বীমা মানবিক জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ প্রিমিয়াম বিনিময়ে ঝুঁকি ও ব্যবস্থাপনা করে থাকে।
খ্যাতিমান বীমা কর্পোরেশন কোম্পানি বাংলাদেশে রয়েছে। যাচাই বাছাই করে বীমা করতে পারেন।অর্থাৎ যার যেটা প্রয়োজন সেই অনুযায়ী বীমা করে নিয়েন।
আশা করি পোস্টটি ভালো লাগবে। কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। ধন্যবাদ!