পুষ্টি কি। What is Nutrition

শারীরিক পুষ্টি,বৃদ্ধি, ও উপকারিতার প্রধান উপকরণ হলো - পুষ্টি।


what is nutrition


আসসালামু আলাইকুম। আজ আবারো একটি নতুন পোস্ট পুষ্টি কি এবং এ সম্পর্কে বিস্তারিত পোস্ট। মানব শরীরে খাদ্যের পুষ্টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বা জিনিস।আমাদের খাদ্য পুষ্টির গুরুত্ব অপরিসীম। একটি মানবদেহের গঠন ও শক্তি আসে খাবার ও পুষ্টি থেকে।তাই আজকে আপনাদের সাথে পুষ্টি ও পুষ্টির বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। সাথেই থাকুন।

পুষ্টি কি :

পুষ্টি হচ্ছে এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে মানবদেহের গঠন,শক্তি, হজম,স্বাস্থ্য সংরক্ষণ ইত্যাদি।মূলত পুষ্টি খাদ্য গ্রহণ,হজম,শোষণ এবং বিপাক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেহের টিস্যু ও কোসগুলো বৃদ্ধি ও মজবুত করে থাকে।

আমরা যেসব খাবার খাই সেইসব খাবার থেকেই পুষ্টিগুন পেয়ে থাকি।এসব পুষ্টিগুন আমাদের দেহে মিশে গিয়ে দেহের কার্যক্রম পরিচালিত হয়।দেহের বৃদ্ধি,শক্তি,হজম প্রক্রিয়া ইত্যাদি এই পুষ্টির মাধ্যমে হয় থাকে।

দৈনিক পুষ্টিকর খাবারের তালিকা 

একজন মানবদেহের শরীরে পুষ্টিকর খাওয়া অত্যন্ত জরুরি। কেননা পুষ্টিকর খাবার গ্রহনের মাধ্যমে একটি মানবদেহের গঠন, শক্তি,বৃদ্ধি ও হাড়ের উন্নতি সাধন হয়।

তাই আমাদের দেহের প্রয়োজন উচ্চ পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা।নিচে গুরুত্বপূর্ণ কিছু পুষ্টিকর খাবারের তালিকা আলোচনা করা হলো।

১) ডিম : সেদ্ধ ডিম,অমলেট ইত্যাদি প্রতিদিনের পুষ্টিকর খাবার,যা গ্রহনে শারীরিক উপকারিতা পাওয়া যায়।

২) আটা রুটি : শরীরবৃত্তীয় পুষ্টিকর খাবারের মধ্যে অন্য আরেকটি খাবার হচ্ছে রুটি।যা শরীরের ওজন কমাতে সহায়ক।

৩) টাটকা ফলের রস : টাটকা ফলের রস খাওয়া শরীরের জন্য খুবই উপকারী। 

৪) সবজি : বিভিন্ন ধরনের সবজি শরীরের জন্য ভালো।

৫) সালাদ : টমেটো, গাজর,শষা ইত্যাদি।

৬) বাদাম : বাদাম খাওয়া শরীরের জন্য খুবই উপকারী ও কার্যকরী খাদ্য।

৭) পানি : বেশি পরিমাণে পানি পান করাটা জরুরি। কারণ পানি হজম শক্তিতে ও কিডনি ভালো রাখতে খুবই উপকারী। 

৮) গ্রীন টি : গ্রীন টি ও লেমন টি খাবারের মধ্যে খুবই ভালো।

রেগুলার এসব খাবার খেলে শারীরিক গঠন ঠিক থাকবে।উপকারীতাও পাবেন।

পুষ্টি কত প্রকার ও কি কি

পুষ্টি সাধারণ ২ প্রকার হয়ে থাকে।

১) মাইক্রোনিউট্রিয়েন্স 

মাইক্রো নিউট্রিয়েন্স হচ্ছে সেই পুষ্টি উপাদান যেখানে খুব কম পুষ্টি উপাদান শরীরে প্রয়োজন হয়।কিন্তু সেই পুষ্টি উপাদান কম পরিমাণ হলেও খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

১) ভিটামিন : শারীরিক বিভিন্ন কার্যক্রমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

২) ভিটামিন - এ : বিশেষ করে ভিটামিন - এ চোখের জন্য খুবই ভালো।

৩) ভিটামিন বি - কমপ্লেক্স : শক্তি উৎপাদনে কার্যকরী ভিটামিন।

৪) ভিটামিন - সি : ত্বক সুন্দর করা।রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

৫) ভিটামিন - ডি : হার মজবুত করতে খুবই সহায়ক।

৬) ভিটামিন - ই : এন্টি-অক্সিডেন্ট এর জন্য কার্যকরী উপাদান। 

৭) ভিটামিন - কে : রক্তজমাট বাধতে সাহায্য করে।

২) ম্যাক্রোনিউটিয়েন্স 

ম্যাক্রো নিউট্রিয়েন্স হচ্ছে সেই পুষ্টি উপাদান যা শরীরবৃত্তীয় খুব বেশি পরিমানে লাগে।ম্যাক্রো নিউট্রিয়েন্স শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করে।

১) শর্করা : মূলত শর্করা হচ্ছে মানব শরীরের জন্য প্রধান শক্তির উৎস। 

২) প্রোটিন : শারীরিক কোষ গঠন ও মজবুত করতে সাহায্য করে।

৩) চর্বি : দীর্ঘমেয়াদি শক্তির উৎস। সেলমেমব্রেনের উপাদান। 

পুষ্টি উপাদান কয়টি ও  কি কি

পুষ্টি উপাদান সাধারণত ৬ প্রকার হয়ে থাকে।নিচে তার ব্যাখ্যা দেওয়া হলো :

১) কার্বোহাইড্রেট ( শর্করা) : শরীরের প্রধান শক্তির উৎস। উদাহরণ চাল,রুটি,পাস্তা,চিনি,মধু ও ফল।

২) প্রোটিন : শরীরের কোষ,টিস্যু, অঙ্গের গঠন মেরামত করার জন্য সহায়ক। যেমন - ডাল,বাদাম,বীজ,মাছ, মাংস,ডিম,দুধ ইত্যাদি। 

৩) ফ্যাট (চর্বি) : দীর্ঘমেয়াদী শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করে।সেল মেমব্রেন গঠন করতে সহায়তা করে।উদাহরণ - মাখন, চিজ,অলিভওয়েল,এভোকাড,বাদাম।

৪) ভিটামিন : ভিটামিন শরীরের বিভিন্ন কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেমন - ভিটামিন - এ,ভিটামিন - বি,ভিটামিন - বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন - সি,ভিটামিন-ডি,ভিটামিন - কে।

৫) মিনারেল : মিনারেল শরীরবৃত্তীয় বিভিন্ন কার্যক্রম করে থাকে।যেমন - ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম,পটাশিয়াম, জিঙ্গ।

৬) পানি : পানি শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।যা শারীরিক বিভিন্ন কাজ করে থাকে।মানবদেহে পানির পরিমাণ বেশি প্রা ৩ ভাগের ২ ভাগই পানি।পানি মানবদেহে খাদ্যের পরিপাক করে থাকে।পুষ্টি পরিবহন করে থাকে এই পানি।বর্জ্য পদার্থ অপসারণে খুব কার্যকরী হচ্ছে পানি।

পুষ্টিকর খাবারের উপকারীতা

পুষ্টিকর খাবারের উপকারীতা অনেক।পুষ্টিকর খাবারের মাধ্যমে শরীরের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। পুষ্টিকর খাবার গ্রহনের ফলে শরীরের শক্তি সরবরাহ করে যা নিত্যদিনের কাজ করার সামর্থ্য যোগায়।

পুষ্টিকর খাবারের ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার ফলে দেহের গঠন বৃদ্ধি পায়।পুষ্টিকর খাবার গ্রহনে রোগের ঝুঁকি কমায়।

ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি হাড় মজবুত করতে সহায়ক। 
সুষম খাবার ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহন করার ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

পুষ্টিকর খাবার স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।মানসিক শান্তি রক্ষায় পুষ্টিকর খাবারের গুরুত্ব অপরিসীম। 

শেষ কথা 

তো বন্ধুরা বুঝতে পারলেন পুষ্টি কি এবং বাকি বিষয়গুলো।আসলে মন ভালো রাখতে গেলে অবশ্যই পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজন।

খাবার গ্রহনের ফলে মানবদেহে পুষ্টি গুনাগুন প্রতিফলিত হয়।পরিমিত খাবার গ্রহনে সঠিক পুষ্টি পাওয়া যায়।মানব শরীরের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে গেলে পুষ্টির প্রয়োজন। 

এছাড়াও সর্বোত্তম স্বাস্থ্য এবং সুস্থ থাকার জন্য খাদ্যের পুষ্টির খুবই প্রয়োজন। কাজ করার ক্ষমতা মানুষ পায় মূলত খাবারের পুষ্টি থেকে।কারণ খাবারের পুষ্টি শরীরের শক্তি যোগাতে সক্ষম।তবে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ করাটা মোটেও সঠিক কাজ নয়।অতিরিক্ত খাবার গ্রহনের ফলে শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।এর মধ্যে প্রধান সমস্যা হচ্ছে শারীরিক ওজন বেড়ে যাওয়া।

সুতরাং শরীরের ভালো স্বাস্থ্য ও সুস্থ থাকার জন্য অবশ্যই খাবারের নিয়ম মেনে চলা উচিত।সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবারের উপাদান হচ্চে পানি।পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করলে দেহের হজম,পরিপাক হওয়া ইত্যাদি কাজে লাগে।

সবাই সুস্থ থাকবেন, ভালো থাকবে।আজকের পোস্ট এই পর্যন্তই।আবার অন্য একটি পোস্টে আলোচনা হবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে। ততক্ষণে সুস্থ থাকুন এটাই কামনা করি।আসসালামু আলাইকুম। 

১০ টি ওষধি খাবার তালিকা পড়তে ক্লিক করুন

নবীনতর পূর্বতন

نموذج الاتصال