নতুন হয়ে থাকলে আপনার জানা জরুরী - নতুনদের জন্য কম্পিউটার শিক্ষা।
বর্তমান যুগ তথ্য প্রযুক্তির যুগ।প্রযুক্তির এই যুগে এসে কম্পিউটার শিক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আজকের আর্টিকেলে "নতুনদের জন্য কম্পিউটার শিক্ষা" সম্পর্কে একটি আর্টিকেল নিয়ে আসলাম।নতুনরা মনোযোগ দিয়ে পড়বেন।তো চলুন শুরু করা যাক।
কম্পিউটার কী
আগে জেনে নেই কম্পিউটার কী? কম্পিউটার হচ্ছে একটি ডিভাইস যার দ্বারা বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম করা হয়ে থাকে। যেমন - তথ্য প্রক্রিয়া করা,বিশ্লেষণ করা,প্রোগ্রাম অনুযায়ী কাজ করা ইত্যাদি।
কম্পিউটারের মূল উপাদান দুটি যথা - (১) হার্ডওয়্যার (২) সফটওয়্যার।
এই দুটি উপাদানের সমন্বয়ে কম্পিউটার গঠিত।
Compute শব্দটি থেকে Computer শব্দটি এসেছে।যা আগে তার অর্থ ছিল গণনাকারী যন্ত্র।কিন্তু বর্তমানে এটি আর শুধুমাত্র গননা করে তা নয়, এখন ডেটা সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করে থাকে।
বর্তমানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির যুগ হওয়ায় কম্পিউটারের ব্যবহার দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে।এবং ক্রমশঃ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কম্পিউটারের ইতিহাস
প্রাচীন ইতিহাসে কম্পিউটার আগে ব্যবহার হতো শুধুমাত্র গননার কাজ করার জন্য।প্রাচীন কালে আবাক্যাস নামক কম্পিউটার সর্বপ্রথম এটি ব্যবহৃত হতো।
২৪০০ শতাব্দীতে এই আবাক্যাস নামক কম্পিউটারটি ব্যবিলনে আবিষ্কার হয়।জানলে অবাক হবেন যে প্রথমদিকের যে কম্পিউটার ছিল তা রাখার জন্য আস্ত একটি বড় ঘরের প্রয়োজন হতো।
অর্থাৎ তখনকার কম্পিউটার রাখার জন্য বড় বড় ঘরের প্রয়োজন হতো।আর অনেকে হয়তো জানেন যে আধুনিক কম্পিউটারের জনক চার্লস বেভেজ।
তিনিই সর্বপ্রথম আধুনিক কম্পিউটারের ধারনা দেন।২০ শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে আধুনিক কম্পিউটারের ধারনা পাওয়া যায়।
১৯৭১ সালে প্রথম মাইক্রোপ্রসেসর উদ্ভাবন হয়েছিল যার ফলে কম্পিউটারের কিছু উন্নতি হতে শুরু করেছে।
এর পর থেকে বাজারে আসতে শুরু করে Personal Computer বা PC।
এইসবের প্রয়োজনের জন্য তৈরি হয় বিভিন্ন অপারেটিং সিস্টেম, তথ্য,কোম্পানী, প্রোগ্রামিং ভাষা ইত্যদি।
১৯৭১ সালে ইন্টেল কোম্পানি মাইক্রোপ্রসেসর বাজারে ছেড়ে দেয়,এই থেকে আস্তে আস্তে আসতে থাকে বিভিন্ন ধরনের পিসি বা পারসোনাল কম্পিউটার।
১৯৮১ সালে IBM কোম্পানি একটি পারসোনাল কম্পিউটার এসেছিল, যা কম্পিউটার ইতিহাসে একটি অনন্য কম্পিউটার।
আর এর পর থেকেই আধুনিক সকল কম্পিউটারের বিকাশ ঘটতে থাকে।আকারও ছোট হয়ে যায়।বর্তমানে তো আরো নতুন নতুন প্রযুক্তির কম্পিউটার বাজারে আসছে।যা অনেক রকম কাজ করে থাকে।
কম্পিউটার শিক্ষার গুরুত্ব
কম্পিউটার শিক্ষার গুরুত্ব বর্তমানে অনেক।বর্তমান যুগ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির যুগ। এই যুগে এসে কম্পিউটার শিক্ষার গুরুত্ব অনেক। কেননা বর্তমান যুগের প্রায় সকল কাজ কম্পিউটার দ্বারা সম্পাদিত হয়ে থাকে।
অর্থাৎ বর্তমানে একটি প্রায় সকল কার্যক্রম অনলাইনে ইন্টারনেট ও কম্পিউটার দ্বারা হয়ে থাকে।অনলাইনে যেকোনো কাজ করতে গেলেই প্রথমেই ইন্টারনেট সংযোগসহ একটি কম্পিউটারের কথা মাথায় আসে।তাই এর গুরুত্ব অনেক।
বর্তমানের এই যুগে কম্পিউটার শিক্ষার মাধ্যমে কর্মসংস্থান এর জায়গা করা যেতে পারে।কারণ কম্পিউটার শিক্ষার মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন অপারেটর পদে চাকরি করা যায়।দেশের তরুণদের কর্মসংস্থান এর দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।
নেট সহ কম্পিউটার থাকলে ঘরে বসেই বিভিন্ন তথ্য সম্পর্কে ধারণা নেয়া যায় এই কম্পিউটার থেকে।তবে হ্যাঁ এখনকাত সময়ে এসে মোবাইল দিয়েও এসব করা যায়।তবে মোবাইল এবং কম্পিউটার দুটির মধ্যে কিছু ফারাক আছে।কম্পিউটারে একটু সুবিধা হয় একটু বেশি আরকি।
প্রেজেন্টেশন, ডেটা বিশ্লেষণ, ডেটা ইনপুট ইত্যাদি কার্যক্রম গুলো সাড়তে কম্পিউটার প্রয়োজন। বর্তমানে বাংলাদেশের সকল কলেজ বিভাগগুলো অনলাইনের মাধ্যমে ফরম পূরণ করে ভর্তির আবেদন করা যায় এই কম্পিউটার দিয়ে।
কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী যোগাযোগ সহজতর হয়।ঘরে বসে সকল কাজ সম্পাদনা করা যায় বিধায় এটির গুরুত্ব অনেক বেশি।
এছাড়াও আরো অনেক বিশেষ কাজের জন্যও এই কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়ে থাকে।প্রাচীনকালে হয়তো শুধু গননার ভিত্তিতে কম্পিউটার তৈরি করা হয়েছিল, কিন্তু এটি এখন আর শুধু গননার জন্য নয়,বিভিন্ন ধরনেত কাজের জন্য এটি ব্যবহার করা হয়।
আশা করি বুঝতে পারলেন যে কেন এতটা গুরুত্বপূর্ণ কম্পিউটারের বর্তমানে। ভবিষ্যতে এর আরো ব্যপক ভাবে প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যাবে।
কম্পিউটার কয়টি অংশ নিয়ে গঠিত
কম্পিউটার প্রধানত দুটি উপাদান নিয়ে গঠিত (১) হার্ডওয়্যার (২) সফটওয়্যার।
এই দুটি অংশ কম্পিউটারে মিলিত হয়ে কাজ করে থাকে।
আসুন জেনে নেই কম্পিউটার এর তিনটি অংশ কী কী তা আলোচনা করি :
হার্ডওয়্যার :
- ইনপুট ডিভাইস : যেসব ডিভাইস ব্যবহার করে কম্পিউটারকে তথ্য প্রদান করে তাকেই বলে ইনপুট ডিভাইস।
√ মাউস
√ স্ক্যানার
√ মাইক্রোফোন
√ ক্যামেরা
- আউটপুট ডিভাইস : যেসব ডিভাইস ব্যবহার করে কম্পিউটার থেকে তথ্য পাওয়া বা গ্রহণ করা হয় তাকেই বলে আউটপুট ডিভাইস।
√ প্রিন্টার
√ স্পিকার
- সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট : এটি হচ্ছে কম্পিউটার এর মস্তিষ্ক যাকে বলা হয় CPU এটি সব কাজ পরিচালনা করে থাকে।
√ কন্ট্রোল ইউনিটে সকল কাজ নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে।
√ রেজিস্ট্রার যা অস্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করে থাকে।
- স্টোরেজ/মেমোরি : এটি হচ্ছে সেই ইউনিট যেখানে সকল তথ্য জমা থাকে।স্থায়ীভাবে রাখা যায় তবে ডিলেট করলে থাকবে না।
√ ROM যা একটি স্থায়ী মেমরি
√ Hard Disk ও একটি স্থায়ী মেমরী
√ SSD
সফটওয়্যার :
এটি বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার যার দ্বারা কম্পিউটারে ইনস্টল করার মাধ্যমে কম্পিউটার এর বিভিন্ন কার্যক্রম করা হয়ে থাকে।
- সিস্টেম সফটওয়্যার : কম্পিউটার পরিচালনার জন্য বিভিন্ন সফটওয়্যার।
√ ইউটিলিটি প্রোগ্রাম
- এপ্লিকেশন সফটওয়্যার : নির্দিষ্ট কাজের জন্য কিছু সফটওয়্যার
√ এক্সেল
√ পাওয়ার পয়েন্ট
√ ওয়েব ব্রাউজার
√ মিডিয়া প্লেয়ার
√ গ্রাফিক্স ডিজাইন সফটওয়্যার।
এগুলৈ হলো একটি কম্পিউটারের বিভিন্ন অংশ।যা কম্পিউটার শিক্ষার জন্য জানা খুবই জরুরী।
কম্পিউটারের বিভিন্ন অংশের কাজ
কম্পিউটার এর বিভিন্ন কার্যক্রম করার জন্য কম্পিউটার কিছু জিনিস কাজ করে থাকে।নিচে এই সম্পর্কে দেওয়া হলো :
১) মাদারবোর্ড : এর কাজ হচ্ছে কম্পিউটারের সকল কিছুকে যোগাযোগ স্থাপন করা হয়ে থাকে।CPU,RAM ইত্যাদিকে একে অপরের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করে।
২) CPU : সিপিইউ (Central Processing Unit) হচ্ছে কম্পিউটার ডিভাইসের মস্তিষ্ক। মাদারবোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করে থাকে।
৩) র্যাম (RAM) : র্যাম হচ্ছে কম্পিউটার ডিভাইসের একটি অস্থায়ী মেমরি। এখানে এপ্লিকেশনগুলো ইনস্টল করা হয়।
৪) রম (ROM) : ROM (Random Access Memory) হচ্ছে একটি কম্পিউটার ডিভাইসের স্থায়ী একটি মেমরি।
এটির মধ্যে কম্পিউটারের ফাইলগুলো জমা থাকে।
৫) Hard Drive : এটি একটি স্থায়ী ডিভাইস, যেখানে ডেটা সংরক্ষণ করে রাখা হয়।
৬) কিবোর্ড : কিবোর্ড এর কাজ হচ্ছে কম্পিউটারকে নির্দেশ দেওয়া।
৭) মাউস : নির্দেশ ও ক্লিক করার জন্য ব্যবহার হয়।
৮) মনিটর : এখানে তথ্য বা ডেটা সকল কিছু এইখানে দেখা যায়।
৯) প্রিন্টার : কাগজের মধ্যে ডাটাগুলো প্রিন্ট কপি বের করা হয়।
১০) গ্রাফিক্স কার্ড : যা গেমিং এর জন্য বা আরো অন্যান্য কাজের জন্য ব্যবহৃত হয়।
১১) অপারেটিং সিস্টেম : এটির দ্বারা হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার এর কাজ করা হয় বা পরিচালনা করা হয়।
১২) এপ্লিকেশন সফটওয়্যার : এটি দ্বারা নির্দিষ্ট কোনো কাজ করা হয়।
১৩) সিস্টেম ইউটিলিটি : কম্পিউটারের রক্ষনাবেক্ষণ ও ভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা করে থাকে।
কম্পিউটারের প্রধান কাজ কি
কম্পিউটারের প্রধাম কাজ আগে ছিল সীমিত এখন সীমিত নয়।বর্তমানে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন তথ্য বা ডেটাকে বিশ্লেষণ, গ্রহণ, গানিতিক ফাংশন কাজ,ভিডিও দেখা,তথ্য খোজা ইত্যদি কাজ।
সকল কিছু করা যায় বর্তমানের কম্পিউটার ব্যবহার করে।যেকোনো তথ্য অস্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করে রাখা যায়।Hard Disk, SSD, RAM, ROM ইত্যাদিতে তথ্য রাখা যায়।
কম্পিউটার দিয়ে বিভিন্ন বিনোদন মূলক কার্যক্রম করা যায় যেমন - গান দেখা, ভিডিও দেখা,গান শোনা,গেম খেলা ইত্যাদি। বর্তমানে কন্টেন্ট ক্রিয়েটররা গেমিং ভিডিও আপলোড করে ইনকাম করছে এই কম্পিউটারে খেলে।
মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, এক্সেলের মতো এপ্লিকেশনে অফিসিয়াল কার্যক্রম ও ডকুমেন্ট তৈরি ইত্যাদি কাজ করা যায়।মোট কথা কম্পিউটারের কোনো জুড়ি নেই।
সোসিয়াল মিডিয়া ব্যবহার করে অন্যান্যদের সাথে সহযে যোগাযোগ স্থাপন করা যায়।যোগাযোগের ক্ষেত্রেও বড় একটি মাধ্যম হচ্ছে কম্পিউটার।
শিক্ষার ক্ষেত্রেও কম্পিউটার ব্যবহার এগিয়ে আছে।শিক্ষার্থীরা কম্পিউটার শিক্ষা গ্রহণ করে কর্মসংস্থান এর যোগান দিতে পারে।
শেষের কথা
কম্পিউটার শিক্ষার এটি Introduction দিলাম মাত্র আস্তে আস্তে সকল কিছু পেয়ে যাবেন কম্পিউটার বিষয়ে।
কম্পিউটার বিষয় পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের দিকে ফলো রাখুন।শীগ্রই কম্পিউটার শিক্ষা সম্পর্কে আরো পোস্ট নিয়ে আসবো।
কম্পিউটার শিক্ষাটা কঠিন কোনো কাজ নয়।চাইলেই যে কেউ শিখতে পারে।তবে নিজের প্র্যাকটিস থাকাটা জরুরি বেশি।
প্র্যাকটিস না থাকলে ভুলেও যেতে পারেন।বর্তমানে দেশের প্রত্যেক জেলা উপজেলায় অন্তত একটি করে হলেও কম্পিউটার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।
কিন্তু সবার ক্ষেত্রে টাকা ব্যয় করে শিখাটা পসিবল নাও হতে পারে।শুধুমাত্র মোবাইল থাকলেই ধারনা নিতে পারবেন।
আমার ওয়েবসাইটে প্রতিনিয়ত কম্পিউটার শিক্ষা সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট আপডেট করা হবে।চোখা রাখলেই সকল বিষয় সম্পর্কে শিখতে পারবেন।
আশা করি বুঝতে পারলেন যে কম্পিউটার শিক্ষা সম্পর্কে। বর্তমানে এর গুরুত্ব অনেক।কেননা বর্তমান বাংলাদেশের প্রায় বেশিরভাগই কাজ কম্পিউটার অনলাইনে করা হয়।
তাই আশা করি আমার ওয়েবসাইটে চোখ রাখলে কম্পিউটার শিখতে পারবেন।আজকের পোস্ট এই পর্যন্তই।সুস্থ থাকবেন, ভালো থাকবেন।
Tags
কম্পিউটার শিক্ষা