পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট কিভাবে পাবেন।

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স কি,পুলিশ

ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট

কিভাবে পাবেন।

বিস্তারিতভাবে জেনে নিন।


Police Clarence


পুলিশ ক্লিয়ারেন্স কি তা নিশ্চয়ই অনেক লোকেই শোনেছেন।কিভাবে পাবেন,এটি দিয়ে কি কি করা যায়, তা হয়তো খুব কম লোক জানে।তাদের জন্যই আজকের এই পোস্ট যারা গুগলে গিয়ে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সম্পর্কে সার্চ করে।তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক পুলিশ ক্লিয়ারেন্স কি,কিভাবে পাবনে।

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স কি

আসলে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স হচ্ছে একটি কাগজমাত্র।এই কাগজটি মূলত পুলিশ বিভাগ দ্বারা ইস্যু করা হয়ে থাকে আসলে এই কাগজ দিয়ে হবে কি।এই কাগজ দ্বারা প্রমান করা হয় যে একজন ব্যক্তির নামে কোনো ধরনের অপরাধমূলক কাজের রেকর্ড নেই।

এই কাগজটি বিশেষ করে যারা বিদেশে যাত্রা করবে তাদের জন্য এই কাগজটি প্রয়োজনীয়। কারণ অপরাধমূলক কাজের রেকর্ড থাকলে বিদেশে ভ্রমণ করা কঠিন হয়ে পড়ে।আর তাই এই কাগজ বা সার্টিফিকেট পুলিশ থেকে দিয়ে থাকে।

অর্থাৎ এটি এমন একটি সার্টিফিকেট যা দ্বারা প্রমান করে যে বিদেশ ভ্রমণের যাত্রীর পেছনের কোনো খারাপ রেকর্ড নেই।যা একজন ব্যক্তির বিদেশ ভ্রমণে কোনো বাধা থাকে না।আশা করি বুঝতে পেরেছেন। 

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট কেন প্রয়োজন 

এই সার্টিফিকেট বিভিন্ন কারণে ব্যক্তি তাদের প্রয়োজন মোতাবেক তৈরি করে থাকে। তবে এটি বিশেষ করে যারা বিদেশ যাত্রা করে তাদের জন্য এই সার্টিফিকেট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও আরো অনেক রকমের প্রয়োজন রয়েছে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট এর।আসুন জেনে নেই।

১) বিদেশে উচ্চ শিক্ষা :

দেশের অনেক ছেলে-মেয়ে আছে যারা বিদেশে গিয়ে পড়াশোনা করতে যায়।যারা বিদেশে গিয়ে পড়াশোনা করতে চায়, তারা এই সার্টিফিকেটটি সংগ্রহ করে বিদেশ যাত্রায় বাধা কমিয়ে থাকে।

২) বিদেশে চাকরি :

যারা বাইরের দেশে চাকরি করে, এটি তাদের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ কাগজ। বাইরে কাজ করতে গেলে বাইরের লোকেরা অবশ্যই আপনার সম্পর্কে ভালো করে জানতে চাইবে।দেখবে যে কোনো খারাপ রেকর্ড আছে কি না।তাই চাকরির ক্ষেত্রেও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

৩) ভিসা আবেদন :

বাংলাদেশ থেকে অন্যান্য দেশে ভ্রমণ করতে গেলে ভিসা তো লাগবেই,এটা ছাড়া তো আর হবে না।তাই যখন ভিসা আবেদন করতে হয়, তখন এই পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট প্রয়োজন পড়বে।

৪) অন্যান্য দেশে থাকতে :

বাংলাদেশের অনেক লোকজন আছে যারা বিদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করে।তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড সম্পর্কে জানার জন্য এই পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট খুঁজে থাকে বাইরের ব্যক্তিরা।তাই এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাগজ।

৫) দেশের চাকরি :

অনেক সময় বাংলাদেশের কিছু চাকরির প্রতিষ্ঠান প্রার্থীর চরিত্রগত ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করে থাকে এটি বিশেষ করে সরকারি কিছু প্রতিষ্ঠান খুঁজে থাকে।

সুতরাং বুঝতেই পারছেন এই কাগজের কত দাম।এটি অনলাইনে আবেদন করে মাত্র নির্দিষ্ট কিছু ফী প্রদান করে এটি নাগরিক হিসেবে পেতে পারেন।

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট করতে কি কি লাগে

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট করতে নির্দিষ্ট কিছু কাগজপত্রের প্রয়োজন পড়বে।গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাগজের যাচাইয়ের সহিত এই সার্টিফিকেট উত্তোলন করা যায়।
  • আবেদন ফর্ম।
  • ন্যাশনাল আইডি কার্ড (NID Card)
  • পাসপোর্ট এর কপি
  • পাসপোর্ট সাইজ ছবি। 
  • অগ্রিম ফি জমা দানের রসিদ।
  • ঠিকানার প্রমাণপত্র। 
  • পুলিশ প্রশাসন অনুযায়ী অতিরিক্ত কিছু কাগজ লাগতে পারে,যা প্রশাসন থেকে জানিয়ে দেবে
উল্লেখ করা কাগজগুলে অবশ্যই লাগবে।তবে পুলিশ প্রশাসন থেকে হয়তো আরো কিছু অতিরিক্ত কাগজ লাগতে পারেব।এটি প্রশাসন থেকে জানিয়ে দেবে অতিরিক্ত কোন লাগজ লাগতে পারে।

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স করার নিয়ম 

বর্তমানে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পেতে নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে অনলাইনে আবেদন করতে হয়।আর সেই নিয়মগুলো ফলো করে সহজেই আপনি অনলাইন অথবা অফলাইনে দুটি মেথডে এপ্লাই করতে পারবেন।

১) প্রথমে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পোর্টালে যেতে হবে।সেখানে গিয়ে কিছু তথ্য দিয়ে রেজিষ্ট্রেশন করে নিতে হবে।

২) রেজিষ্ট্রেশন করার পরে User name ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে নিবেন।

৩) এই ধাপে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য ও ঠিকানা আরো ইত্যাদি তথ্য দিতে হবে।

৪) আবেদনের ফরমের সাথে ব্যক্তির কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে।উপরে আমি দিয়েছি কি কি কাগজ লাগবে।

৫) অনলাইনে ফী জমা দিতে হবে।এবং একটি রসিদ দিবে যা পরবর্তীতে কাজে লাগবে।এই কাজটি অনলাইন অফলাইন দুটোই করতে পারবেন। 

৬) আবেদন তথ্য ও সকল ডকুমেন্টস আপলোড করে সাবমিট করে দিবেন।

৭) আপনার আবেদনটি মাঝে মাঝে অনলাইনে ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে দেখতে পারবেন।

৮) এর পরে আপনার আবেদন যাচাই করে দেখবে সকল তথ্য ঠিক আছে কি না।

৯) থানার যারা কর্মকর্তা আছেন তারা আপনাকে কল করতে পারে যদি অতিরিক্ত কোনো ডকুমেন্টস বা তথ্য দিতে হতে পারে।

১০) আপনার দেওয়া সকল তথ্য যাচাই প্রক্রিয়া শেষ হলে, যদি দেখে যে কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কোনো রেকর্ড না থাকলে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ইস্যু করা হবে।

১১) পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ইস্যু হওয়ার পরে আপনাকে হয়তো কল করবে পুলিশ প্রশাসন থেকে। অথবা অনলাইনে গিয়ে ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে যেকোনো সময় পিডিএফ ফাইলে ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।

তবে এটি বের হতে বা কোনো সময় আসতে একটু দেরি হতে পারে।আসবে ঠিকই কিন্তু একটু সময় লাগতে পারে।

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স করতে কত টাকা লাগে

বাংলাদেশের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পেতে একটি নির্দিষ্ট একটি ফী জমা দিতে হয়।এই ফী মূলত ৫০০ টাকা দেওয়া লাগতে পারে।

তবে বিভিন্ন আপডেট ও বিভিন্ন বিষয়ের উপরে কম-বেশি হতে পারে।তাই আবেদন করার আগে আপডেট জেনে নিবেন।

এই ফী সাধারণত নির্দিষ্ট কোনো ব্যাংক অথবা অনলাইন গেটওয়ের মাধ্যমে পেমেন্ট করতে হয়।ফী জমা দিলে আপনাকে একটি রিসিট/রসিদ দিবে যা আপনার পরবর্তীতে কাজে লাগবে।এই রসিদ হারাবেন না।

যেকোনো সময় ফী এর নিয়ম নীতি পরিবর্তিত হতে পারে তাই নির্দিষ্ট ফী সম্পর্কে থানায় গিয়ে যেনে নেওয়া উচিত।

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট এর মেয়াদ কতদিন 

বাংলাদেশ পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট এর মেয়াদ সাধারণত যেদিন তৈরি করা হয় ঠিক ঐদিন থেকে ৬ মাস পর্যন্ত এটর বৈধতা থাকে। এর মানে হলো এই যে একজন ব্যক্তি যদি জুন মাসে ইস্যু করে থাকে তাহলে এর মেয়াদ থাকবে জুন মাস থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত, অর্থাৎ ৬ মাস এর মেয়াদ।

তবে নির্দিষ্ট কিছু ভিসা বা প্রক্রিয়ার জন্য বিভিন্ন মেয়াদ থাকতে পারে।এটা জেনে নেওয়া জরুরি। আশা করি বুঝতে পারলেন। অর্থাৎ ৬ মাস পর্যন্ত এটির মেয়াদ যা আপনার এটির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে পর্যন্ত আপনি এটি ব্যবহার করতে পারবেন। তবে মেয়াদ শেষ হলে আবার আবেদন করা যাবে।

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পেতে কতদিন লাগে

সাধারণত পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পেতে ১০-১৫ দিন সময় লাগতে পারে।মূলত সময় লাগার কারণ হলো এই সময়ের ভিতরে আপনার সম্পর্কে ভালোভাবে সঠিক খোঁজ খবর নেওয়া।

অর্থাৎ আপনার ব্যাকগ্রাউন্ড কেমন,আপনার পূর্বের কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড আছে কি না।অথবা আপনি কোনো অপরাধের সাথে জড়িত ছিলেন কি না এইসব যাচাই-বাছাই করে তারপরে আপনাকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট দেওয়া হবে।

আরো কিছু বিষয় রয়েছে।যেমন - শহরাঞ্চলের তুলনায় গ্রামীন অঞ্চলের লোকেদের একটু বেশি সময় লাগতে পারে।অনেক সময় যাচাই বাছাই করার সময় অতিরিক্ত সময়ের প্রয়োজন হতে পারে।

আরেকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে, যদি একদিনের মধ্যে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট আবেদন অনেক বেশি হয়ে যায়,ঐসময় একটু বেশি দেরি হতে পারে।আশা করি সময়ের ব্যাপারে বুঝতে পারছেন। সুতরাং একটু সময়তো লাগতেই পারে।

শেষ কথায়

বন্ধুরা আশা করি আপনাদের সার্চ করা উত্তর পেয়ে গেছেন।আসলে এই পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট তখন প্রয়োজন পড়ে যখন একজন ব্যক্তির বিদেশে ভ্রমণ করতে হয়।

আর এই পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পেতে আপনাকে অনলাইনে বা থানায় গিয়ে সরাসরি আবেদন করতে পারবেন। নির্দিষ্ট কিছু ফী প্রদান করে অনলাইনেও করতে পারেন।

আর হ্যাঁ একটু সময় লাগবেই যেহেতু বিদেশে ভ্রমণের সুরক্ষার জন্য।আশা করি উত্তর পেয়ে গেছেন।ধৈর্য ধরে সময় নেন পেয়ে যাবেন যদি অপরাধের সাথে জড়িত না থাকেন।আজকের পোস্ট এই পর্যন্তই।সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। 

নবীনতর পূর্বতন

نموذج الاتصال