মাস্টারকার্ড কী? এর
ইতিহাস ও বিবর্তন এবং
এর ব্যবহার আরো
অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে
জানুন।
আসসালামু আলাইকুম আশা করি সবাই ভালো আছেন। আজকের এই টপিকে আপনাদেরকে জানাবো মাস্টারকার্ড সম্পর্কে। এর সকল কিছু নিয়ে আজকের এই ব্লগে আলোচনা করা হবে,তাই পোস্টটি মনোযোগ দিয় পড়তে থাকবেন।
মাস্টারকার্ড কী
মাস্টারকার্ড হচ্ছে একটি বহুজাতিক অর্থনৈতিক লেনদেনের পরিষেবা সংস্থা যা বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের অর্থ লেনদেন সহজ করে তুলেছে।মাস্টারকার্ড হচ্ছে প্লাস্টিকের তৈরি একটি কার্ড।যেখানে আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া যায়।
মানবজীবনের অর্থনৈতিক সঙ্গী হচ্ছে এই মাস্টারকার্ড।
মাস্টারকার্ড হচ্ছে বৈশ্বিক পেমেন্ট প্রযুক্তি কোম্পানী,যা ডেবিট, ক্রেডিট এবং প্রিপেইড কার্ডের মাধ্যমে অর্থ লেনদেনের সুবিধা প্রদান করে।এটি একটি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ব্যাংক,আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান এবং গ্রাহকদের মধ্যে লেনদেন সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ করতে সাহায্য করে।
এই কার্ডের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ক্রেডিট কার্ডগুলো গ্রাহকদের পূর্ব নির্ধারিত ক্রেডিট লিমিটের মধ্যে ব্যয় করার সুযোগ দেয়।দ্রুত এবং নিরাপদ করে।যা পরবর্তী সময়ে পরিশোধ করতে হয়।অন্যদিকে ডেবিট কার্ড সরাসরি ব্যাংকের সাথে কানেক্ট করা থাকে।গ্রাহকদের ব্যাংকে থাকা টাকা ব্যবহার করে থাকে।
ইতিহাস
মাস্টারকার্ডের যাত্রা শুরু হয় ১৯৬৬ সালে, যখন ব্যাংক অব ক্যালিফোর্নিয়া এবং অন্যান্য কয়েকটি আঞ্চলিক ব্যাংক একত্রিত হয়ে একটি ব্যাংক কার্ড এসোসিয়েশন তৈরী করে।এই এসোসিয়েশনের প্রধান উদ্দ্যেশ ছিল একটি সাধারণ পেমেন্ট সিস্টেম তৈরি করা যা ব্যবহারকারীদের গ্রহণযোগ্য ও সহজতর হয়ে উঠে।
প্রাথমিকভাবে এই কার্ডটি InterBank নামে পরিচিত ছিল, পরবর্তীতে ১৯৬৯ সালে মাস্টার চার্জ (Master Charge নামে পরিচিতি পায়। পরবর্তীতে ১৯৭৯ সালে এই কার্ডের নামকরণ করা হয় মাস্টারকার্ড ( MasterCard) যা পরবর্তীতে কোম্পানির প্রসারের ইঙ্গিত দেয়।
১৯৯৭ সালে মাস্টারকার্ড ইন্টান্যাশনাল এবং মাস্টারকার্ড ইউরোপের একত্রীকরণের মাধ্যমে এই কোম্পানী আরো শক্তিশালী হয়ে উঠে।অন্যদিকে ২০০৬ সালে মাস্টারকার্ড ইনকর্পোরেটেড একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানী হিসেবে আত্নপ্রকাশ করে।
মাস্টারকের এই দীর্ঘ যাত্রায় এই প্রযুক্তি উন্নয়ন সেবার প্রসার ঘটেছে।মাস্টারকার্ড কোম্পানী ১৯৯৭ সালে ইলেকট্রনিক পেমেন্ট প্রযুক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি সাধন করে যা ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড ব্যবহারে জনপ্রিয়তা বাড়ে।
২০০২ সালে মাস্টারকার্ড কোম্পানীটি চিপ ভিত্তিক কার্ডের আবিষ্কার করে,যা ছিল কার্ডের নিরাপত্তা ও ব্যবহারের সুরক্ষা।বর্তমানে এই মাস্টারকার্ড পেমেন্ট সেবা দিয়ে থাকে।যেমন - কন্টাক্টলেস,মোবাইল পেমেন্ট,
অনলাইন ট্রান্সফারের মাধ্যমে তার গ্রাহকদের আধুনিক লেনদেন সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে।
মাস্টারকার্ডের ব্যবহার
মাস্টারকার্ড শুধু পেমেন্ট সিস্টেম নয় এটি ডেবিট ক্রেডিট ও প্রিপেইড কার্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন আর্থিক সেবা দিয়ে থাকে।আসুন জেনে নেই এর বিভিন্ন ব্যবহার সম্পর্কে।
(১) ক্রেডিট কার্ড : মাস্টারকার্ড ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীদের পূর্ব নির্ধারিত ক্রেডিট লিমিটের মধ্যে
খরচ করার অনুমতি দেয়।ব্যবহারকারীরা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে বিভিন্ন পণ্য ও সেবা কিনতে পারেন।পরবর্তী নির্ধারিত সময়ে অর্থ পরিশোধ করতে পারেন।
(২) ডেবিট কার্ড : ডেবিট কার্ড দিয়ে সরাসরি ব্যাংক থেকে অর্থ ব্যয় করার সুবিধা দেয়।ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে একাউন্টে থাকা অর্থের বাইরে খরচ করা যায় না,ফলে ব্যয় কমে যায়।
(৩) প্রিপেইড কার্ড : প্রিপেইড কার্ড হচ্ছে একটি লোডেড কার্ড যা নির্ধারিত পরিমাণ অর্থের মধ্যেই সীমাবিদ্ধ।এটি সাধারণত উপহার কার্ড বা অন্যান্য সীমিত ব্যবহারের কার্ড হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
আধুনিক মাস্টারকার্ড
বর্তমান মাস্টারকার্ড হচ্ছে বহু উন্নত ও আধুনিক মাস্টারকার্ড। আধুনিক পেমেন্টের ক্ষেত্রে তার অবস্থা সুদৃঢ় করেছে।মোবাইল পেমেন্ট প্লাটফর্মগুলির সাথে অংশীদারত্ব এবং নিজস্ব আধুনিক ওয়ালেট সেবার মাধ্যমে মাস্টারকার্ড আধুনিক অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে।ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং অন্যান্য ডিজিটাল মুদ্রার সাথে সম্পর্কিত উদ্ভাবনের মধ্যেও মাস্টারকার্ডের সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে।
শেষ কথা
মাস্টারকার্ড তার দীর্ঘ ইতিহাসে আর্থিক লেনদেনের পদ্ধতিতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।কেবলমাত্র একটি ক্রেডিট কার্ড বা ডেবিট কার্ড নয়, মাস্টারকার্ড হচ্ছে একটি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক নেটওয়ার্ক।
বর্তমান সময়ে মাস্টারকার্ডের যে অগ্রগতি আমরা দেখছি তা ভবিষ্যতে আরো ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত হবে নিশ্চিত। ডিজিটাল প্রযুক্তির দ্রুত উন্নয়ন ও প্রযুক্তির উদ্ভাবনের ও উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে মাস্টারকার্ড ভবিষ্যতে
অর্থনৈতিক ব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে।
Tags
ব্যাংক