ডেবিট কার্ড কী।

ডেবিট কার্ড কী? কিভাবে

ডেবিট কার্ড হাতে পেতে

পারেন বিস্তারিত জানুন।


Debit card


আসসালামু আলাইকুম আশা করি সবাই ভালো আছেন। আজকের এই ব্লগের টপিকে আমি রেখেছি ডেবিট কার্ড সম্পর্কে বিস্তারিত। ডেবিট কার্ড কী?কিভাবে হাতে পেতে পারেন ডেবিট কার্ড,এই কার্ডের ব্যবহার আরো ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাই চলুন দেরি না করে শুরু করে দেই।

ডেবিট কার্ড কী 

ডেবিট কার্ড হচ্ছে একধরনের অর্থনৈতিক কার্ড যা একটি ব্যাংক দ্বারা ইস্যু করা হয়। ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি চাইলে ব্যাংক থেকে ঘরে বসে টাকা উত্তোলন করতে পারে।অথবা চাইলে মার্কেট থেকে কেনাকাটা করতে পারে।

কোনো ব্যক্তি যখন ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট করে থাকে,তখন এই টাকাটা সরাসরি ব্যাংক থেকে কেটে নেওয়া হয়।এই কার্ডটি যদিও ক্রেডিট কার্ডের মতো তবে মূল পার্থক্য হলো ডেবিট কার্ড ব্যবহার করতে গেলে ব্যক্তির একাউন্টে পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ জমা থাকতে হবে।আর এটিই হলো ডেবিট কার্ড। 

ডেবিট কার্ডের ইতিহাস 

ডেবিট কার্ডের ইতিহাস যা একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার ফল।আপনি জানেন কী বাংলাদেশের ব্যাংকিং সিস্টেমের উন্নতির সাথে এই ডেবিট কার্ড জড়িত।ব্যাংকের অগ্রগতির ফলেই এই কার্ডের আবিষ্কার। 

প্রাথমিক যুগে

ডেবিট কার্ডের ধারণা প্রথম প্রকাশ পেয়েছিল ১৯৬০ এর দশকে।প্রথম প্রথম এই কার্ডগুলো ছিল "চার্জ কার্ড" হিসেবে।প্রাথমিক যুগে এই ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে গ্রাহকেরা নির্দিষ্ট দোকানে ক্রয় করতেন পরে বিল পরিশোধ করে দিতেন।

প্রথম আধুনিক যুগে 

১৯৭০ - এর দশকে প্রথমবারের আধুনিক ডেবিট কার্ড প্রচলন হয়েছিল। বাণিজ্যিকভাবে প্রথম ডেবিট কার্ড চালু হয় ১৯৭৮ সালের দিকে।প্রথমবারের মতো তখন ডেবিট কার্ড চালু হয়েছিল যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিউইয়র্ক সিটি ব্যাংক তাদের গ্রাহকদেরকে ডেবিট কার্ড ইস্যু করে দেয়।

আন্তর্জাতিক গ্রহনযোগ্যতা

১৯৮০ - এর দশকে ডেবিট কার্ডের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। পরবর্তীতে তা আন্তর্জাতিক বাজারে ছড়িয়ে পড়ে।
ভিসা এবং মাস্টারকার্ডের মতো বড় বড় কোম্পানীগুলো 
ডেবিট কার্ডের নেটওয়ার্ক খুলে দেয় ফলে ব্যাংকের গ্রাহকেরা বিশ্বের যেকোনো স্থানে ব্যবহার করতে পারে।

প্রযুক্তির উন্নয়ন 

১৯৯০ - ২০০০ দশকের দিকে ডেবিট কার্ডের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ঘটে।এতে চিপ ও পিন, প্রযুক্তির সংযোজন,অনলাইন ব্যাংকিং বিকাশ এবং কন্টাক্টলেস পেমেন্ট সুবিধা অন্তর্ভুক্ত ছিল। 

বর্তমানে

আজকের দিনের ডেবিট কার্ড গুলো আধুনিক জীবন-যত্রার একটি অপরিহার্য অংশ।সারাবিশ্বের মানুষের লেনদেনকে আরো সহজতর করেছে এই বর্তমানের এই ডেবিট কার্ডগুলো।ভবিষ্যতে ডেবিট কার্ডগুলো আরো উন্নতমানের হতে পারে।

ডেবিট কার্ড কিভাবে পাওয়া যায়

মূলত ডেবিট কার্ড হাতে পেতে হলে প্রথমে ব্যক্তির একটি ব্যাংক একাউন্ট খোলা থাকতে হবে।চলুন বলে দেই কিভাবে পাবেন ডেবিট কার্ড। 

১) ব্যাংক একাউন্ট খোলা :

প্রথমে একটি সেভিংস বা কারেন্ট ব্যাংক একাউন্ট খোলতে হবে।ব্যাংক একাউন্ট খোলার পরে কিছু প্রসেসের মাধ্যমে ডেবিট কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন। 

২) ডেবিট কার্ডের জন্য আবেদন :

প্রয়োজনীয় সকল নথি বা কাগজপত্র জমা বা পূরণ করে ডেবিট কার্ডের জন্য আবেদন করা যায়। অনেক ব্যাংক অনলাইনে আবেদন ও ফরম পূরণ প্রক্রিয়া হয়ে থাকে।চাইলে যে কেউ অনলাইনে ডেবিট কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারে।

৩) কার্ড প্রস্তুতি এবং ডেলিভারি:

ডেবিট কার্ডের জন্য অনলাইনে বা সরাসরি ব্যাংকে গিয়ে আবেদন করা হয়েছিল সেই কার্ডের প্রস্তুতি রয়েছে।ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আবেদনকারীর সকল তথ যাচাই করে ব্যক্তিকে ডেবিট কার্ড দিয়ে দিবে।তবে কিছুদিনের সময় ব্যবধানে কার্ডটি ব্যক্তির হাতে দিয়ে দিবে।

৪) কার্ড সক্রিয়করণ :

ডেবিট কার্ড হাতে পাওয়ার পরে কার্ডটি সক্রিয় করিতে হয়ে।সক্রিয় করার জন্য প্রথমে ব্যক্তিকে কার্ডের নিরাপত্তার জন্য চার সংখ্যার পিন সেট করতে হবে।কোনো কোনো সময় sms বা ইমেইলের মাধ্যমে সক্রিয় করা হয়ে থাকে।

৫) কার্ড ব্যবহার করা শুরু :

ডেবিট কার্ড সচল হওয়ার পরে ব্যক্তি এটিএম থেকে টাকা উত্তোলন করতে পারবে।অথবা POS মেশিনে কেনাকাটার বিল পরিশোধ করতে পারবে।

তবে ডেবিট কার্ড পেতে অবশ্যই ব্যাংকের নিয়মকানুন মেনে কার্ডের জন্য আবেদন করতে হবে।উল্লেখিত উপায় অনুসরণ করে সহজে যে কেউই ডেবিট কার্ড পেতে পারেন।


ডেবিট কার্ডের ব্যবহার 

ডেবিট কার্ডের ব্যবহার হচ্ছে বহুমুখী ব্যবহার। অর্থাৎ এই কার্ডটি অনেক জায়গায় ব্যবহার করা যায়।

(১) এটিএম থেকে টাকা উত্তোলন 

যে কেউ চাইলে এটিএম বুথ থেকে ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করতে পারেন।ডেবিট কার্ড এটিএম মেশিনে ঢুকিয়ে পিন নাম্বার দিয়ে টাকা উত্তোলন করতে পারেন খুব সহজে। 

(২) দোকানে কেনাকাটা

কোনো দোকানে কেনাকাটা করার সময় ব্যবহার করা যায়।দোকান থেকে কিছু কিনে তারপরে POS (Point of Sale) মেশিনে কার্ড সোয়াইপ  বা ইনসার্ট করে দোকানের বিল দিতে পারেন।

(৩) অনলাইন কেনাকাটা 

ডেবিট কার্ড দিয়ে অনলাইন পেমেন্ট করা যায়।এই কার্ড দিয়ে পেমেন্ট করতে গেলে কার্ডের নাম্বার,CVV, মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ, কার্ড নাম্বার দিতে হয়।

(৪) বিল পরিশোধ 

ডেবিট কার্ড দিয়ে বিভিন্ন ধরনের বিল পরিশোধ করা যায়।যেমন - ইউটিলিটি বিল,বিদ্যুৎ বিল,গ্যাস বিল ইত্যাদি বিল পরিশোধ করা যায়।

(৫) ভ্রমণ ও হোটেল বোকিং

কোনো জায়গায় ভ্রমণে অথবা হোটেল বুক করতে গেলে এই ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট করে বুক করা যায়।আরো নানান ধরনের সুবিধা এর রয়েছে।

সুতরাং ডেবিট কার্ড একজন ব্যক্তি এইভাবেই বা এই ধরনের কাজে ব্যবহার করতে পারবেন। 

উপসংহার 

আশা করি ডেবিট কার্ড সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন।আসলে আধুনিক এই যুগে ডেবিট কার্ড ব্যাংকের গ্রাহকের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। এর ব্যবহারও খুব সহজ।এর উপকারিতা অনেক।বিভিন্ন ধরনের কাজে এটি ব্যবহার করে জীবনমান উন্নত হয়।অনলাইনে পেমেন্ট থেকে শুরু করে কেনাকাটা,বিল পরিশোধ ইত্যাদি কাজে ব্যবহার করতে পারা যায়।এই কার্ডটি হাতে পেতে হলে নির্দিষ্ট একটি ব্যাংকে গিয়ে একাউন্ট করার পরে, যেকোনো সময়ে আবেদন করে কার্ডটি হাতে পেতে পারেন।

নবীনতর পূর্বতন

نموذج الاتصال